সংযুক্ত অারব অামিরাতের অাজমানে বাংলাদেশী মালিকানাধীন রিচ এন্ড রোজ পারফিউম কোম্পানীর ফ্যাক্টরিততে আগুন লেগে কোটি কোটি টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। আমিরাতের মুদ্রা দিরহাম হিসেব ক্ষতির পরিমান ২৫ থেকে ৩০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত বুধবার ২৫ জানুয়ারী সকালে বিদুৎতের শট সার্কিট থেকে অাগুনের সূত্রপাত হয়।
সংযুক্ত আরব অামিরাতে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানের এটাই সবচেয়ে বড় দূর্ঘটনা বলে জানা যায়। আগুন লাগার পর অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা শত চেষ্টার করেও ফ্যাক্টরী থেকে কোন মালামাল উদ্ধার করতে পারেনি।
রীচ এন্ড রোজ প্রতিষ্টানটি মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক বিখ্যাত অাল হারামাইন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্টান। এ প্রতিষ্টানের ফ্যাক্টরীতে ক্যামিকাল জাতিয় পদার্থ থাকায় অাগুন নিয়ন্ত্রনে বেগ পেতে হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
ফ্যাক্টরিটি বাংলাদেশী মালিকানাধীন সবচেয়ে বড় পারফিউম কোম্পানি অাল হারামাইন ইন্ডাষ্ট্রি হতে অাধা কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্হিত। ফ্যাক্টরির ওয়াইর হাউজে পারফিউমের অনেক দামী জিনিষপত্র ছিল বলে উল্লেখ করেন। পুলিশ এ দূর্ঘটনার কারন বের করার জন্য তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ কন্সূলেট দুবাইয়ের কন্স্যাল জেনারেল বদিরুজ্জামান ও লেবার কন্সূলার জাকির হোসেন ঘঠনাস্থলে পরিদর্শন করে অাসেন। বাংলাদেশের রাষ্টদূত ডাঃ মোহাম্মদ ইমরান এ দূর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বলতে গিয়ে প্রতিষ্টানটির চেয়ারম্যান সিআইপি অালহাজ্ব মাহতাবুর রহমান নাছির কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি জানান, অামার ব্যবসায়িক জীবনে এটায় সবচেয়ে বড় দূর্ঘটনা। তিনি বলেন, ফ্যাক্টরি তৈরী কালে সকল প্রকার সাবধানতা ও বিল্ডিং কোড মেনে তৈরী করা হয়েছিল। সিভিল ডিফেন্সের লোকজন পরিদর্শন করে ২৫ জানুয়ারী সকালে সব কিছু ঠিক অাছে বলে জানিয়েছিল।

কোম্পানির সব কিছু লিগ্যাল ছিল। অামার জীবনে অামি আনলিগ্যাল কিছু করিনি।, তবে ফ্যাক্টরির কোন কর্মচারী বা কর্মকর্তা এ দূর্ঘটনার আহত হয়নি বলে তিনি অাল্লাহর কাছে শুকরিয়া অাদায় করেন ।তিনি বলেন রিচ এন্ড রোচ কোম্পানিটি ফ্রান্স ভিত্তিক। ফ্রান্সে ২০১৩ সালে ফ্যাক্টরিটি তৈরি হয়।এ কোম্পানির দিত্বীয় ফ্যাক্টরিটি ২০১৪ সালে অামিরাতের অাজমানে স্থাপিত হয়। সারা ওয়ার্ল্ডে এই কোম্পানির বাৎসরিক সাপ্লায় পরিমান ছিল প্রায় ৩০ থেকে৩৫ মিলিয়ন ডলার । তিনি ২০১৭ সনের জন্য এমেরিকা সহ সারা বিশ্বের অস্যংখ এজেন্ট কোম্পানীগুলোর সাথে অর্ডার বুকিং ছিল এ কোম্পানীর। মূলত এ কোম্পানির রপ্তানি ছিল ইউরোপ ও আমেরিকা অঞ্চলে।তাই এ দূর্ঘটনায় ওয়ার্ল্ড মার্কেটে বড় ধরনের বিপর্যয় অাসতে পারে বলে মাহাতাবুর রহমান নাছির উল্লেখ করেন।
এদিকে গতকাল বাংলাদেশ দূতাবাস, বাংলাদেশ কন্সূলেটেরর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।পরিদর্শন শেষে কমার্শিয়াল কাউন্সিলার ডঃ রফিক অাহাম্মদ বলেন, মধ্যপ্রাচের এ প্রতিষ্টানটি অামাদের বাংলাদেশীদের গর্ব। এ ক্ষতি শুধু মাহাতাবুর রহমানের নাছিরের নয় বাংলাদেশী প্রবাসী ও সকল বাংলাদেশীর।
এদিকে আমিরাতের অন্যতম ব্যবসায়ী অালম গ্রুপের কর্নধার মোঃ অালম গঠনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি দুঃখ করে বলেন, ক্ষতির পরিমান অনেক বেশী। তিলে তিলে গড়ে তোলা প্রতিষ্টান এভাবে চোখের সামনে নিঃশ্বেষ হয়ে যাওয়াটা কত যে কষ্টের তা ব্যবসায়ী হিসেবে অামি বুঝি। তাই এ সময়ে অামাদের সকলের দায়িত্ব এ প্রতিষ্টানের পাশে দাড়িয়ে প্রতিষ্টানেরর মালিক মাহাতাবুর রহমান নাছিরকে অনুপ্রেরনা দেওয়া, সাহস দেওয়া। কেননা সারা বিশ্বে এই কোম্পানীর যে ডিমান্ড রয়েছে তা পূরন করা অত্যান্ত জরুরী।